ঢাকা ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ইটনায় সরকারি বিদ্যমান সেবা বিষয়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত মদনে সংবাদ প্রকাশের পর স্কুল কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙ্গল বিদ্যালয় প্রাঙ্গন দখল করে ঘর নির্মাণ করছেন শিক্ষক রাজধানীতে পার্বত্য জেলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যসমৃদ্ধ বিপনী বিতান উদ্বোধন করেন: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে মদন উপজেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি সায়েম সাধারণ সম্পাদক আরিফ মদনে ফের বয়রাহালা ব্রীজের এপ্রোচ দখল করে ঘর নির্মাণ মদনে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কৃষককে হত্যার চেষ্টা মদনের এ.ইউ.খান উচ্চ বিদ্যালয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ মদনে এক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি শূন্য

জনসংখ্যা হোক জনসম্পদ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১
  • ১৮৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২০ সালের শেষে উন্নয়নসূচকে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল তিন বছর বেশি। শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ভারতে যেখানে ২৮, আমাদের তা প্রতি হাজারে ২৫। নারীর ক্ষমতায়ন ও শ্রমে অংশগ্রহণে ভারতের অর্জন যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশের ৩৬ শতাংশ।

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা বাংলাদেশের তুলনায় আরও বেশি নাজুক এবং বাংলাদেশ ওই দেশটির তুলনায় ২০২১ সালে ৪৫ গুণ বেশি ধনী। অথচ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাংলাদেশের তুলনায় ৭০ গুণ ধনী ছিল (Mihir S Sharma, Business Standard, 1 June 2021)। একজন পাকিস্তানি অর্থনীতিবিদ নাকি আফসোস করে বলেছেন, ২০৩০ সালে পাকিস্তানকে হয়তো বাংলাদেশের কাছে সাহায্য চাইতে হবে।

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের এ প্রেক্ষাপটে এবার ৩২তম বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হচ্ছে। তবে পরপর দুবছর বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের আয়োজন যেন অনেকটাই নিষ্প্রভ। ২০২০ সালে করোনা সারা দেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রায় এলোমেলো করে দিয়েছিল। করোনার সময়ে নিরাপদে ঘরে থাকা, বাইরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরার পাশাপাশি সংক্রমণ রুখতে লকডাউন ও আইসোলেশন-কোয়ারেন্টিন মেনে চলায় মা-শিশুর স্বাস্থ্য ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবার গতানুগতিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এতে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারকারীর হার কিছুটা কমেছে। আবার অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণও বেড়েছে। এর মধ্যেই পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আওতাধীন ৩ হাজার ৯৩০টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ৩০ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিক, ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, জেলা পর্যায়ে ৬১টি এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ১২৫টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রসহ ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস সেন্টার, ১৭৩ শয্যাবিশিষ্ট আজিমপুর এমসিএইচটিআই, ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মা-শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান(লালকুঠি মিরপুর) করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবার পরিকল্পনা ও মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। সুখী পরিবার কল সেন্টারের মাধ্যমে যাবতীয় মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা, কিশোর-কিশোরীর প্রজনন স্বাস্থ্যসেবাসহ পরিবার পরিকল্পনা সেবার তাৎক্ষণিক পরামর্শ চলমান রয়েছে।। উল্লেখ্য, মাঠ পর্যায়েও মাঠকর্মীরা মা-শিশু স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা সেবা কার্যক্রমে অনলাইন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

জন্মনিয়ন্ত্রণ, মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা, কিশোর-কিশোরী ও সক্ষম দম্পতির প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, বাল্যবিবাহ রোধ, মানবিকতার সঙ্গে সন্তান লালন এবং ছোট সুখী পরিবার গঠন, দারিদ্র্য বিমোচন, ২৪/৭ দিনে প্রাতিষ্ঠানিক নিরাপদ ডেলিভারিকরণ, প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব পরিবার নির্মাণে খুন, ধর্ষণ, সহিংসতা থেকে শিশু-কিশোর-কিশোরী ও নারীকে রক্ষার জন্য ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু রোধ, পুষ্টিমান বজায় রাখা এবং কর্মক্ষম তরুণ প্রজন্মকে বেকারত্ব থেকে মুক্তকরণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করাই হলো এবারের বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের মূল কর্মসূচি।

জনসংখ্যা সীমিত রেখে বিদ্যমান জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করার মাধ্যমেই একটি দেশ উন্নত হতে পারে। আমাদের লক্ষ্যও হোক তা-ই।

চয়ন সেনগুপ্ত : উপপরিচালক (নিরীক্ষা), পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইটনায় সরকারি বিদ্যমান সেবা বিষয়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

জনসংখ্যা হোক জনসম্পদ

আপডেট টাইম : ১০:৩৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২০ সালের শেষে উন্নয়নসূচকে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল তিন বছর বেশি। শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ভারতে যেখানে ২৮, আমাদের তা প্রতি হাজারে ২৫। নারীর ক্ষমতায়ন ও শ্রমে অংশগ্রহণে ভারতের অর্জন যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশের ৩৬ শতাংশ।

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা বাংলাদেশের তুলনায় আরও বেশি নাজুক এবং বাংলাদেশ ওই দেশটির তুলনায় ২০২১ সালে ৪৫ গুণ বেশি ধনী। অথচ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাংলাদেশের তুলনায় ৭০ গুণ ধনী ছিল (Mihir S Sharma, Business Standard, 1 June 2021)। একজন পাকিস্তানি অর্থনীতিবিদ নাকি আফসোস করে বলেছেন, ২০৩০ সালে পাকিস্তানকে হয়তো বাংলাদেশের কাছে সাহায্য চাইতে হবে।

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের এ প্রেক্ষাপটে এবার ৩২তম বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হচ্ছে। তবে পরপর দুবছর বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের আয়োজন যেন অনেকটাই নিষ্প্রভ। ২০২০ সালে করোনা সারা দেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রায় এলোমেলো করে দিয়েছিল। করোনার সময়ে নিরাপদে ঘরে থাকা, বাইরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরার পাশাপাশি সংক্রমণ রুখতে লকডাউন ও আইসোলেশন-কোয়ারেন্টিন মেনে চলায় মা-শিশুর স্বাস্থ্য ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবার গতানুগতিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এতে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহারকারীর হার কিছুটা কমেছে। আবার অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণও বেড়েছে। এর মধ্যেই পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আওতাধীন ৩ হাজার ৯৩০টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ৩০ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিক, ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, জেলা পর্যায়ে ৬১টি এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ১২৫টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রসহ ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস সেন্টার, ১৭৩ শয্যাবিশিষ্ট আজিমপুর এমসিএইচটিআই, ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মা-শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান(লালকুঠি মিরপুর) করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবার পরিকল্পনা ও মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। সুখী পরিবার কল সেন্টারের মাধ্যমে যাবতীয় মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা, কিশোর-কিশোরীর প্রজনন স্বাস্থ্যসেবাসহ পরিবার পরিকল্পনা সেবার তাৎক্ষণিক পরামর্শ চলমান রয়েছে।। উল্লেখ্য, মাঠ পর্যায়েও মাঠকর্মীরা মা-শিশু স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা সেবা কার্যক্রমে অনলাইন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

জন্মনিয়ন্ত্রণ, মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা, কিশোর-কিশোরী ও সক্ষম দম্পতির প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, বাল্যবিবাহ রোধ, মানবিকতার সঙ্গে সন্তান লালন এবং ছোট সুখী পরিবার গঠন, দারিদ্র্য বিমোচন, ২৪/৭ দিনে প্রাতিষ্ঠানিক নিরাপদ ডেলিভারিকরণ, প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব পরিবার নির্মাণে খুন, ধর্ষণ, সহিংসতা থেকে শিশু-কিশোর-কিশোরী ও নারীকে রক্ষার জন্য ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু রোধ, পুষ্টিমান বজায় রাখা এবং কর্মক্ষম তরুণ প্রজন্মকে বেকারত্ব থেকে মুক্তকরণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করাই হলো এবারের বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের মূল কর্মসূচি।

জনসংখ্যা সীমিত রেখে বিদ্যমান জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করার মাধ্যমেই একটি দেশ উন্নত হতে পারে। আমাদের লক্ষ্যও হোক তা-ই।

চয়ন সেনগুপ্ত : উপপরিচালক (নিরীক্ষা), পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর